দৃষ্টি কাড়ছে টালির তৈরি ইকো মসজিদ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফরিদপুরের ভাঙ্গায় টালির তৈরি বায়তুর রহমান জামে মসজিদটি সকলের দৃষ্টি কাড়ছে। নয়ন জুড়ানো ইকো মসজিদটি পরিবেশবান্ধব ও ব্যতিক্রমধর্মী।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে মাটির তৈরি ফলক বা টালি দিয়ে। টালি দিয়ে তৈরি করায় এর নির্মাণশৈলী এবং পুরো চত্বরের দৃশ্য নজর কাড়ছে সবার। এছাড়া টালি দিয়ে নির্মাণ করায় মসজিদের ভেতরে সব সময় শীতল থাকে।

জেলার ভাঙ্গা উপজেলার কাউলীবেড়া ইউনিয়নের খাটরার নীলচক এলাকায় প্রায় তিন শতাংশ জমির ওপর এ মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। স্থানীয় সমাজসেবক ও ঢাকা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ আরিফুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে এটি নির্মিত হয়েছে। ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর জুমার নামাজ আদায়ের মাধ্যমে এ মসজিদটির উদ্বোধন করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার খাটরা গ্রামটিতে ব্রিটিশ আমলে নীল চাষ হতো। সে অনুযায়ী দৃষ্টিনন্দন বায়তুর রহমান জামে মসজিদের নির্মাণ জায়গাটা এখনও ‘নীলচক’ নামে পরিচিত। কালের গর্ভে হারিয়ে যাওয়া এ অঞ্চলের নীলচাষ বন্ধ হলেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি গ্রামটিতে। এছাড়া এখানকার অধিকাংশ মানুষ অস্বচ্ছল। এজন্য মসজিদ-মাদরাসাও সেভাবে গড়ে ওঠেনি। আশপাশের কয়েক কিলোমিটারের মধ্যে অন্য কোনো মসজিদও সেভাবে চোখে পড়ে না। এ এলাকার বেশিরভাগ মানুষ বাড়িতেই নামাজ আদায় করতেন।

এসব বিষয় চিন্তা ভাবনা করে স্থানীয় মোহাম্মদ আরিফুর ইসলামের পরিকল্পনা ও অর্থায়নে এ মসজিদটি নির্মাণ করা হয়।

মসজিদটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি  বলেন, এ অঞ্চলে তাপমাত্রা অনেক বেশি। তাই গরমের সময় মুসল্লিদের নামাজ আদায় করতে কষ্ট হয়। এ কথা মাথায় রেখে টালির ছাদ দিয়ে এ মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। কারণ টালির ছাদ থাকায় প্রচণ্ড গরমেও মসজিদের ভেতরে ঠাণ্ডা থাকবে।

মসজিদটির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. সাহেদ আলী মাতুব্বর বলেন, এ মসজিদে একসঙ্গে প্রায় ১৩০ জন নামাজ আদায় করার ব্যাবস্থা আছে। তবে মসজিদটিতে শৌচাগার, টিউবওয়েল ও ইমামের থাকার ঘরের ব্যাবস্থা করা হলে আরো ভালো হবে।

এ ব্যাপারে মসজিদটির ইমাম হাফেজ  বলেন, মসজিদটি ব্যতিক্রম ও দৃষ্টিনন্দন। সকলের নজর কাড়ছে। মসজিদটিতে প্রতিদিন অনেক মুসল্লির সমাগম ঘটে। এখানে নামাজ পড়াতে পেরে নিজের কাছেও বেশ ভালো লাগছে।

এ বিষয়ে মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ২০০৭ সালে আমার বাবা মারা যান। মা মারা গেছেন ২০২১ সালের মে মাসে। বাবা-মায়ের জন্য সাদকায়ে জারিয়া হিসেবে কিছু করার চিন্তা করছিলাম। সে অনুযায়ী আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য আমাদের কল্যাণমুখী ফাউন্ডেশন (আলহাজ্ব সাইদুল-কোহিনুর ফাউন্ডেশন) থেকে মৃত আত্মীয়-স্বজন ও মাতা-পিতার রুহের মাগফিরাত কামনা করে এ পরিবেশবান্ধব মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা করি। মসজিদটি পরিবেশবান্ধব করে নির্মাণের উদ্দেশ্য হলো যাতে আল্লাহ তায়ালার বান্দারা সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে প্রাণভরে আল্লাহ তায়ালার ইবাদত বন্দেগি করতে পারেন, তাকে স্মরণ করতে পারেন।

এ প্রসঙ্গে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)  বলেন, এ উপজেলায় এ রকম একটি দৃষ্টিনন্দন ও ইকো মসজিদ রয়েছে আমার জানা ছিল না। সময় নিয়ে মসজিদটিতে নামাজ আদায় ও পরিদর্শনে যাবো।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর